আমরা , আমাদের পৃথিবী ,মহাবিশ্ব এবং এর সৃষ্টিকর্তা
 |
মহাবিশ্ব |
আমাদের মহাবিশ্ব আসলে কতটা বিশাল আর কি কি লুকিয়ে আছে আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি ? এই পৃথিবীকে আমরা অনেক বিশাল মনে করছি এই পৃথিবীর বেশীরভাগই জলরাশি আর সামান্য অংশই বসবাসযোগ্য আর এর সবটুকুর রহস্য আমরা এখনো ভেদ করতে পারিনি আল্লাহ তায়ালা মহা গ্রন্থ আল কোরআনে বহুবার বলেছেন তার সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করতে আমরা যদি আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টি কে না চিনি তাহলে আল্লাহ তায়ালা কে কিভাবে চিনবো আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টিকে কিছুটা জানার চেষ্টা থেকে এখানে আজকে আমরা কিছু জানতে চেষ্টা করবো, আমরা জানতে চেষ্টা করবো আমাদের মহাবিশ্ব এবং এর শেষ সীমা কোথায় যদিও সেটা সম্ভব নয়, একটু চেষ্টা মাত্র চলুন সংক্ষিপ্ত আকারে আমরা মহাবিশ্ব ভ্রমণ করে আসি । ধরুন আমরা পৃথিবী থেকে উপরের দিকে যাত্রা শরু করলাম । আমরা যখন পৃথিবী থেকে ১২ কিলোমিটার উপরে যাবো তখন শেষ হবে ট্রপোস্ফিয়ারের আর এই উচ্চতায় আমাদের পুরো এটমোস্ফেয়ার বা বায়ুমণ্ডলের ৮০ পার্সেন্ট ভর হয়ে থাকে আর এর উপর দিয়েই বেশিরভাগ প্লেন গুলো উড়ে থাকে, যখন আমরা মাটি থেকে ৫০ কিলোমিটার উপরে যাব তখন সেখানে শেষ হবে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার আর এই স্ট্রাটোস্ফিয়ারেই থাকে আমাদের ওজন লেয়ার যা আমাদের বিষাক্ত আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে বাঁচিয়ে থাকে, যখন আমরা ৮০ কিলোমিটার উপরে যাব তখন এখানে শেষ হবে মেজোস্ফেয়ার এরপর যখন আমরা পৃথিবী থেকে ৭০০ কিলোমিটার উপরে যাব তখন আমাদের এখানে শেষ হবে থার্মোস্ফিয়ার এখানকার বাতাস একদম পাতলা হয়ে থাকে আর তাপমাত্রাও অধিক মাত্রায় বাড়তে থাকে আর যখন আমরা সেখান থেকে ১০ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করব তখন আমরা এডজোস্টফেয়ার অতিক্রম করবো আর এডজোস্টফেয়ার সাথে সাথে আমাদের বায়ুমন্ডলও শেষ হয়ে যাবে । চলুন একটু দুরে যাই পৃথিবীর বায়ুমন্ডল অতিক্রম করে আমাদের পরবর্তী গন্তব্যস্থল হচ্ছে আমাদের চাঁদ মামা
 |
চাঁদ |
চাঁদ আমাদের পৃথিবী থেকে তিন লাখ ৪৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দূরে আর এই দুরুত্ব এতটাই যে ৩০টি পৃথিবী এর মাঝে পুরোপুরি এঁটে যাবে চাঁদ হলো আমাদের পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের পর যদি আমরা পৃথিবী থেকে ১৫০ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে যাই তখন আমরা সূর্যের কাছে পৌঁছে যাবো
 |
সূর্য |
সূর্য হচ্ছে আমাদের সৌরমণ্ডলের একমাত্র নক্ষত্র যার তাপমাত্রার ফলেই পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব আছে আর এই সূর্যের প্রখর মধ্যাকর্ষণ শক্তির ফলেই আমাদের পৃথিবী সহ সৌরমণ্ডলের প্রত্যেকটি গ্রহ এবং উপগ্রহ নিজের স্থানে অবস্থান করে রয়েছে এখন আমরা যাবো আমাদের প্রতিবেশী গ্রহ মঙ্গলে
 |
মঙ্গোল |
মঙ্গলের দূরত্ব আমাদের পৃথিবী থেকে সাড়ে ২২ কোটি কিলোমিটার যা পৃথিবী ও মঙ্গলের গড় দূরত্ব । যদি আমরা এখানে আলোর গতিতে আসি তাহলেও ২০ মিনিট লেগে যাবে । এরপর সামনে এগোতে এগোতে আমরা চলে এসেছি আমাদের সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতির কাছে
 |
বৃহস্পতি |
৪টি বড় উপগ্রহ এবং ১২টি ছোটো উপগ্রহ নিয়ে বৃহস্পতি নিজেই একটি সোলার সিস্টেমের মতো আমাদের সৌরমণ্ডলের সবগুলো গ্রহের ওজন যোগ করলেও বৃহস্পতির ওজনের সমান হবে না ।গ্রহটির মাঝ বরাবর রযেছে গ্রেড রেড স্পট শুধু এটুকুই আমাদের পৃথিবী থেকে তিনগুণ বড় । চলুন সামনে যাওয়া যাক
 |
শনি |
এখন যে গ্রহটি দেখতে পাচ্ছেন এটি একটি হলো শনি গ্রহ যা গোলাকার বলয় ঘেরা একটি গ্রহ যা দেখতেও সুন্দর এই বলয় বরফের সাথে মিলে তৈরি হয়েছে এবং শনি গ্রহের ঠিক মাঝ বরাবর লক্ষ কোটি কিলোমিটার জুড়ে বৃস্তিত রযেছে এই বলয় এই গ্রহকে ৬২টি উপগ্রহ প্রদক্ষিণ করে যাচ্ছে আর যেগুলো মধ্যে সবচেয়ে বড় উপগ্রহ টাইটান
 |
ভয়েজার -১ |
এটা হলো মানুষের তৈরি পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরে অবস্থিত স্পেসক্রাফট ভয়েজার -১ আর পৃথিবী থেকে এর দুরুত্ব ১৩৮ এ ইউ (এক এ ইউ সমান পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্বের সমান ) এই ভয়েজার -১ সেখানে প্রতি সেকেন্ডে ১৭ কিলোমিটার গতিতে ছুটে চলেছে
 |
ভয়েজার থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি |
ছবিতে যে ছোট্ট বিন্দু টি দেখছেন এটাই আমাদের পৃথিবী, আমাদের সবকিছু আপনি একবার ভাবুন এই বিন্দুর মধ্যেই আমরা বসবাস করছি আমাদের দুঃখ -বেদনা হাসি -কান্না চাওয়া -পাওয়া সবই এর মধ্যে ।এত এত আবিষ্কার ,আমরা মহাবিশ্ব ভ্রমণে যাই আমরা কত কত প্রযুক্তি পণ্য আবিষ্কার করছি সব এখানে বসেই । চলুন আমরা আরো সামনে যাই যেতে যেতে আমরা আমাদের সৌরমণ্ডলের বাইরে চলে যাব তখন আমরা পৌঁছে যাবো ইন্টেরেস্টলার প্রতিবেশীর কাছ এখানে এ ইউ (এস্টোনোমিক্যাল ইউনিট ) থেকে আমাদের শিফট করতে হবে লাইট ইয়ারে কারণ আমরা এখানে এ ইউ ব্যবহার করতে পারবো না এখানকার দূরত্ব অনেক বেশি । লাইট এয়ার মানে কোন জিনিস বছরে আলোর গতিতে যতদূর যাবেন সেটাই এক আলোকবর্ষ আর আপনার সুবিধার জন্য আমি বলে দিচ্ছি যে আলো এক সেকেন্ডে ৩ লক্ষ কিলোমিটার গতিতে চলে থাকে তার মানে সারে নয় লক্ষ কোটি কিলোমিটার সমান এক আলোক বর্ষ । যেতে যেতে আমরা এখন প্রক্সিমাসেন্টারাইয়ের কাছে যা সূর্যের পর সব থেকে কাছের একটি তারা
 |
প্রক্সিমাসেন্টারাই |
আর এটি পৃথিবী থেকে ৪.২৪ আলোকবর্ষ দূরে আলোর গতির মতো কোনো স্পেসশিপ যদি বিজ্ঞানীরা তৈরি করতে সক্ষম হয় তবুও সেটি পৃথিবী থেকে এখানে পৌঁছাতে প্রায় সাড়ে চার বছর লেগে যাবে আর যে ভয়েজার -১ পেছনে রেখে আসলাম তার ৭০ হাজার বছর লেগে যাবে এখানে আসতে সামনে যেতে যেতে আমরা আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছি আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি ১ লক্ষ আলোকবর্ষ এলাকা জুড়ে বিস্তিত মানে আপনি যদি আলোর গতিতে ছুটে চলেন তাহলে আপনার ১ লক্ষ্ বছর লেগে যাবে এটা ভ্রমণ করতে
 |
মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি |
আমাদের এই গ্যালাক্সিতে আমাদের পৃথিবী আর সূর্যের মতো ১০০ বিলিয়ন গ্রহ-নক্ষত্র রয়েছেন বর্তমানে আমাদের পৃথিবীতে মানুষ ৮.০০ বিলিয়ন বা প্রায় ৮০০ কোটি পৃথিবীর জনসংখ্যার চেয়েও প্রায় ৮ গুন্ বেশি গ্রহ-নক্ষত্র রয়েছে এই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে যেগুলার ৯০% পৃথিবী থেকে বড় আমরা রাতে আকাশে যে তাঁরা দেখে থাকি তা এই গালাক্সির ১০০ ভাগের এক ভাগেরও কম
 |
লোকাল গ্রূপ অফ গ্যালাক্সি |
এখন আমরা যেখানে আসি সেটা হলো লোকাল গ্রূপ অফ গ্যালাক্সি আর মধ্যে প্রায় ৫৪ টি গ্লাক্সি রয়েছে যাদের প্রত্যেকটা মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির থেকে বড় এই লোকাল গ্রূপ অফ গ্যালাক্সি ১ কোটি আলোকবর্ষ এলাকা জুড়ে বৃস্তিত যা আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি থেকে ১০০ গুন্ বড় আমাদের লোকাল গ্রূপ অফ গ্যালাক্সি থেকে একটু দূরে যাওয়ার চেষ্টা করি
 |
ভার্গো সুপার ক্লাস্টার |
এবার আমরা এসেছি ভার্গো সুপার ক্লাস্টার এ আগের অলোচিত লোকাল গ্রূপ অফ গ্যালাক্সি ,ভার্গো সুপার ক্লাস্টার এর ক্ষুদ্র একটি অংশ মাত্র এটি ১১ কোটি আলোকবর্ষ এলাকা জুড়ে বৃস্তিত এখান থেকে একটু সামনে গেলে পাবো লানাইকা সুপার ক্লাস্টার
 |
লানাইকা সুপার ক্লাস্টার |
একটু আগে আলোচিত ভার্গো সুপার ক্লাস্টার অনেক ছোট্ট এই লানাইকা সুপার ক্লাস্টার থেকে এই লানাইকা সুপার ক্লাস্টার যা ৫২০ মিলিয়ান লাইট এয়ার জুড়ে বৃস্তিত মানে এর আয়তন ৫২ কোটি আলোকবর্ষ আপনি যদি আলোর গতিতে চলতে পারেন তারপরও এইটা একবার ঘুরে আসতে আমাদের ৫২ কোটি বছর লাগবে আর মজার ব্যাপার হলো এটি একটি বালুকণার মতো আমাদের অব্জারভেবল ঊনিভার্সের কাছে !!!!! আপনি এখন নিজেকে কিভাবে আবিস্কার করছেন আপনি কিন্তু পৃথিবীর শ্রেষ্ট জীব
 |
অব্জারভেবল উনিভার্স |
এখন আমরা আলোচনা করবো অব্জারভেবল উনিভার্স সম্পর্কে যাকে আমরা অবজার্ভ করতে পারি দেখতে সেটাই হলো অব্জারভেবল উনিভার্স আগে আলোচিত লানাইকা সুপার ক্লাস্টারও অনেক ছোট্ট এই অব্জারভেবল উনিভার্স থেকে যেখানে ২ ট্রিলিয়ন গ্যালাক্সি রয়েছে যেগুলো আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি থেকে কয়েক গুন্ বড় এখানে এতো তাঁরা রয়েছে যে আমাদের পৃথিবীতে যতগুলা বালুকণা রয়েছে তা একটা একটা করে গুনলে তার সমান হবে না !!!!!!!!! এই অব্জারভেবল ঊনিভার্সের আয়তন হলো ৯৩০০ কোটি আলোকবর্ষ যদি আপনি আলোর গতিতে এটা একবার ঘুরে আসতে চান তাহলে আপনার ৯৩০০ কোটি বছর লাগবে মজার বিষয় হলো অব্জারভেবল উনিভার্স প্রতিনিয়ত আলোর গতিতে ছুটে চলেছে অর্থাৎ প্রতিনিয়ত এর আয়তন বৃদ্ধি পাচ্ছে আপনি হয়তো ভাবছেন এটা অনেক বড় কিছু কিন্তু না এটা খুবই ক্ষুদ্র একটা অংশ আমাদের মহাবিশ্বের তুলোনায় আমরা অনেকে আছি সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করিনা আমরা এতক্ষণ যা আলোচনা করলাম তা কিন্তু আপনার বিজ্ঞানের কথা যা কোরআনের বর্ণনার সাথে মিল তাহলে একবার ভাবুন এই মহাবিশ্ব কিভাবে চলছে আপনিতো দেখলেন মহাবিশ্বের তুলনায় পৃথিবী কত ক্ষুদ্র এই পৃথিবীরও ক্ষুদ্র একটি অংশ একটি দেশ মানুষ সঠিকভাবে চালাতে পারেনা তাহলে এই মহাবিশ্ব কিভাবে এত নিখুদভাবে চলছে আর যে উনিভার্স কে আমরা অবজার্ভ করতে পারিনা সেটা তাহলে কত বিশাল আর এই পৃথিবীতে এমন অনেক ক্ষুদ্র প্রাণী রয়েছে যা আমরা খালি চোখে দেখতে পাইনা অথচ আমাদের সৃষ্টিকর্তা সব দেখেন সুবহানাল্লাহ
1 comment