×

হযরত আদম (আ.) – মানবজাতির প্রথম পিতা

হযরত আদম (আ.) – মানবজাতির প্রথম পিতা

হযরত আদম (আ.) ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে মানবজাতির প্রথম পিতা এবং পৃথিবীর প্রথম নবী। তিনি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সৃষ্টি হয়েছিলেন এবং তাঁকে জান্নাতে স্থান দেওয়া হয়েছিল। ইসলাম, খ্রিস্টান এবং ইহুদি ধর্মগ্রন্থে আদম (আ.)-এর কাহিনি বিশদভাবে আলোচিত হয়েছে। তবে ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে এই কাহিনির বিশদ বর্ণনা আল কুরআনে পাওয়া যায়।

সৃষ্টির সূচনা

আল্লাহ তায়ালা আদম (আ.)-কে মাটি থেকে সৃষ্টি করেন। আল্লাহ বলেন:

“আমি মানুষকে মাটির নির্যাস থেকে সৃষ্টি করেছি।” (সুরা আল-মু’মিনুন: ১২)

আল্লাহ তাঁর হাতে আদম (আ.)-কে আকার দেন এবং তাঁর মধ্যে আত্মা ফুঁকে দেন। এরপর ফেরেশতাদের আদেশ করেন, যাতে তারা আদম (আ.)-কে সিজদা করে। সকল ফেরেশতা আল্লাহর আদেশ পালন করেন, কিন্তু ইবলিস, যিনি জিনদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, অহংকারবশত অমান্য করেন। ইবলিস দাবি করেন যে তিনি আগুন থেকে সৃষ্টি, আর আদম মাটি থেকে।

জান্নাতে অবস্থান ও নিষিদ্ধ গাছ

আদম (আ.)-কে তাঁর সঙ্গী হাওয়া (আ.)-সহ জান্নাতে রাখা হয়েছিল। আল্লাহ তাঁদের জান্নাতের সবকিছু উপভোগ করার অনুমতি দেন, তবে একটি গাছ থেকে ফল খাওয়া নিষিদ্ধ করেন। শয়তান তাঁদের কুমন্ত্রণা দিয়ে নিষিদ্ধ গাছের ফল খেতে প্রলুব্ধ করেন। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার পর তাঁরা তাঁদের ভুল বুঝতে পারেন এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আল্লাহ তাঁদের ক্ষমা করেন, কিন্তু পরীক্ষার জন্য পৃথিবীতে পাঠান।

পৃথিবীতে আগমন

আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে পাঠিয়ে আল্লাহ বলেন:

“তোমরা সবাই এখান থেকে নিচে নেমে যাও। তারপর যদি আমার পক্ষ থেকে কোনো হিদায়াত আসে, তবে যারা সেই হিদায়াত অনুসরণ করবে তাদের জন্য কোনো ভয় বা দুশ্চিন্তা থাকবে না।” (সুরা আল-বাকারা: ৩৮)

আদম (আ.) পৃথিবীতে এসে জীবিকা নির্বাহের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে শুরু করেন এবং তাঁর মাধ্যমে মানবজাতির শুরু হয়।

পুত্র-কন্যা এবং মানবজাতির বিস্তার

আদম (আ.) এবং হাওয়া (আ.)-এর সন্তানদের মাধ্যমে মানবজাতি বিস্তার লাভ করে। ইসলামি ঐতিহ্য অনুসারে, তাঁদের প্রথম দুই পুত্র ছিলেন হাবিল ও কাবিল। কাবিলের হিংসার কারণে তিনি হাবিলকে হত্যা করেন, যা ছিল মানব ইতিহাসের প্রথম হত্যাকাণ্ড।

নবুওয়াত ও শিক্ষাদান

আদম (আ.) ছিলেন মানবজাতির প্রথম নবী। আল্লাহ তাঁকে জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও ভাষা শিখিয়েছিলেন এবং এই জ্ঞান তাঁর সন্তানদের মধ্যে ছড়িয়ে দেন। তিনি আল্লাহর আনুগত্য করার এবং শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে দূরে থাকার শিক্ষাও দিয়েছিলেন।

ইন্তেকাল

হযরত আদম (আ.)-এর ইন্তেকালের পর তাঁকে সম্মানের সাথে দাফন করা হয়। তাঁর জীবন ছিল আল্লাহর ইবাদতে পরিপূর্ণ। ইসলামে আদম (আ.)-কে স্মরণ করা হয় মানবজাতির পিতা ও আল্লাহর প্রথম নবী হিসেবে।

শিক্ষণীয় দিক

হযরত আদম (আ.)-এর জীবনী থেকে আমরা শিখি:

  1. ক্ষমা প্রার্থনার গুরুত্ব: ভুল করলেও আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি আমাদের ক্ষমা করেন।
  2. শয়তানের প্রলোভন থেকে সাবধান: শয়তান সর্বদা আমাদের সঠিক পথ থেকে সরানোর চেষ্টা করে।
  3. মানবতার একত্ব: মানবজাতি একই উৎস থেকে এসেছে, তাই আমাদের মধ্যে ভেদাভেদ অনুচিত।

হযরত আদম (আ.)-এর জীবনী ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা এবং মানবজাতির শিকড় সম্পর্কে আমাদের গভীর ধারণা প্রদান করে।

I am Abdur Rob , BBA , MBA From University of Rajshahi . Now i am working as a Deputy Manager of Bangladesh Sugar and Food Industries Corporation .

Post Comment